সৌকর্য গ্রুপের একমাত্র ওয়েবজিন।

About the Template

শুক্রবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১২

সম্পাদকীয় - ১ম বর্ষ, ১ম সংখ্যা

সম্পাদকের কলম থেকে


এই মুহূর্তে ফেসবুকের প্রভাব আজকের নতুন ও পুরোন প্রজন্মের কাছে অত্যন্ত সুবিদিত। ক্ষণিকের মধ্যে সমস্ত পৃথিবীতে পরিচিতজনের কাছে নিজের বক্তব্যকে , অনুভুতিকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য যে ক’টি সামাজিক আন্তর্জালের খ্যাতি চরম সীমায় পৌঁছেছে, তার মধ্যে, ফেসবুক অগ্রগণ্য। আর, তাই পৃথিবী এসেছে হাতের মুঠোয়। এই সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে যেমন গড়ে উঠেছে নানান ধরণের দল , তেমনই গড়ে উঠেছে বহু সাহিত্য চর্চার সংগঠন, সমমনষ্ক ও অসমবয়স্কদের নিয়ে।

ঊনিশশ’ ষাট দশকে প্রাতিষ্ঠানিক পত্রিকাগুলির পাশাপাশি কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গে লিটল ম্যাগ আন্দোলন তৈরী হয়, যদিও প্রথমে তা ছিল রাজনৈতিক ইচ্ছাপ্রণোদিত, কিন্তু ধীরে , তা পরীক্ষা-নিরিক্ষা মূলক সাহিত্যচর্চায় পরিবর্তিত হয়ে যায়। কিন্তু লিটল-ম্যাগ আন্দোলন সাহিত্য-চর্চার ক্ষেত্রে প্রায় বিপ্লব নিয়ে আসে। অগুন্তি, অফুরন্ত প্রতিভাধর লেখক ও লেখিকাকে মানুষের সামনে তুলে ধরতে লিটল ম্যাগাজিন ছিল অদ্বিতীয়, এ আমরা সকলেই জানি। একই রকম ভাবে, ব্লগজিন আন্দোলন এই পরিবর্তনের ইতিহাসের মুকুটে একটি নতুন ময়ুরপুচ্ছ যোগ করল। আমি জানিনা, হয়তো এটিকে আন্দোলন বলা অনেকেই মেনে নেবেননা, কিন্তু যা কিছু মানুষের ভালোর জন্য পরিবর্তন, তাকেই আন্দোলন আখ্যা দেওয়া যায়, আর এই মুহূর্তে, বহু শত গ্রুপের ব্লগজিন আজ রক্তবীজের ঝাড়ের মতোই বারবার আছড়ে পড়ছে ফেসবুকের মাটিতে, আর পাঠককুল বারবার মুগ্ধ হচ্ছে। মানুষ যত সহজে কম্পিউটারে বসে, অবসরে ফেসবুকের পাতা খুলে, ব্লগজিন পড়তে পারেন, তত সহজে লিটল-ম্যাগ, বা বড় পত্রিকা পড়তে পারেননা। তাই , আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ব্লগজিন আন্দোলন আরো আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে, উঠবেই।

সেই বিশ্বাসের ভিত্তিতেই, আমরা, কবিতার জন্য কবিতার পক্ষ থেকে, ব্লগজিন ‘সৌকর্য’ প্রকাশে উদ্যোগী হয়েছি, আরো বহু ব্লগজিনের মতো আমরা শুধু এর উৎকর্ষতার কথাই ভাবিনি, আমরা ভেবেছি, এরকম বহু লেখক লেখিকা আছেন, যারা চেষ্টা করছেন, কিন্তু আত্মপ্রকাশের জমি খুঁজে পাচ্ছেননা, আমরা চাই, তাদেরকে তুলে ধরতে, যদি তার জন্য, বহুচর্চিত, বহুখ্যাত লেখকদের লেখা আমরা না ছাপতে পারি, তাতে আমরা পিছপা হব না, না হয় আমরা ফেসবুকের রাজপথে নাই হাঁটলাম, বন্ধুর পথেই এগোলাম, দরকারে, রাস্তা করে নিতে আমাদের সাহসের কোন কমতি হবে না, এ আমরা কথা দিতে পারি। আমরা জানি, যে সরণী আমরা আজ তৈরী করব, আগামীকাল, সেই পথকেই রাজপথ বলে ঘোষণা করবে, সেই পথেই পা বাড়াবে নতুনদিন। আর তাই চাকচিক্য নয়, আন্তরিকতাই আমাদের পুঁজি। এই কারণে, আমরা প্রতি সংখ্যায়, একজন করে কবির পাঁচটি করে কবিতা ছাপব, যাতে তার লেখার ঘরাণাটা সকলের সামনে তুলে ধরতে পারি, তাকে সকলের সামনে প্রতিষ্ঠা করতে পারি, আজ যে লোকচক্ষুর আড়ালে, কাল সে বহু আলোচিত হয়ে দাঁড়াবে।

আসুন, আমরা একসঙ্গে পথ হাঁটি, দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হবে বন্ধু, হাতে দিন হাত, পায়ে পা মিলিয়ে রাস্তা ভাঙ্গি, সেই রাস্তা, যা আজ কষ্টকর ও এবড়োখেবড়ো, কিন্তু আমাদের পায়ের তলায় আমরা আগুন নিয়ে হাঁটা শুরু করলাম, এই শারদীয়ার পুন্যলগ্নে, এক মন্ত্রধ্বনিতে আকাশ ভরিয়ে দিয়ে “যা দেবী সর্বভুতেষু, বুদ্ধিরূপেন সংস্থিতা, নমস্তঃসৈ নমস্তঃসৈ নমস্তঃসৈ, নমহ নমহ, যা দেবী সর্বভুতেষু, বিদ্যারূপেন সংস্থিতা, নমস্তঃসৈ নমস্তঃসৈ নমস্তঃসৈ, নমহ নমহ , যা দেবী সর্বভুতেষু, শক্তিরূপেন সংস্থিতা, নমস্তঃসৈ নমস্তঃসৈ নমস্তঃসৈ, নমহ নমহ ...”


বৈজয়ন্ত রাহা
সম্পাদক, সৌকর্য


0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন