সৌকর্য গ্রুপের একমাত্র ওয়েবজিন।

About the Template

শুক্রবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১২

বৈজয়ন্ত রাহা

আঠারোশ’ শতকের লাতিন আমেরিকার কবি
কনরাড আইকেন এর ‘A for Alfa, Alfa for A’
ভাবানুসরণে বৈজয়ন্ত রাহা



এইভাবে সন্ধেরা পলাতক ফেরারীর মতো

মাঠ ভেঙ্গে, ঘর ভেঙ্গে জ্যোৎস্নাকে নিয়ে ফিরে ফিরে আসে,
ঘাসজমি পড়ে থাকে লুব্ধ চিতার মুখে--
যেনো হরিণের মাংসের ভোজ হবে বড়ো...
আমাদের গ্রামগুলি এভাবেই পড়ে পড়ে থাকে,
যেন কোন নির্লজ্জ কিশোরীর ঠোঁটে
বাধাহীন চুম্বন-নেশায় ...শেষরাত ডুবে গেছে,
চাঁদ নেমে আসে
ঘরে ঘরে উঠোনে , দাওয়ায়...

জটিল ছায়ায়, সপ্তশাখা জুড়ে কোন মর্মর-ধ্বনি

প্রাচীন গাছের ঝুরি নেমে নেমে যায় কবিতার সপ্তসুরে,
অতলে মায়ায়, খুঁজে আনে ফেলে আসা জন্মের যোনি;

ছায়া দীর্ঘ হয়--অলিন্দ-প্রাঙ্গণ জুড়ে—

দিন তবে শেষ হল;
সুদূর পাখির মতো—সোনালি ডানায় সূর্য অস্ত যায়,
আকাশের নীলে মিশে , কত নীলে মিশে, তারারা কাঁপে
(গত বসন্তে আমার বয়স কত ছিল?)
দিগন্ত রেখায়
সমস্ত ভুবন যেন গলে গলে মিশে গেছে রক্তচ্ছটায়,
আমি শুনি
ভাসানের গান
আর, সন্ধে নেমে আসে।

শব্দহীন পদক্ষেপে আমি দুলে উঠি

সন্ধে আসে আমার কুটির ঘিরে –আমার ভিতরে
প্রবল ভাঙ্গনে, নিঃস্তব্ধ মিশ্রণে
ভেঙ্গে ফেলে স্বপ্নের নিকোন উঠোন,
আমার নিজস্ব সূর্যাস্ত, আমার পৃথিবী
যেখানে পথের শেষ, অন্য পৃথিবীর শুরু
যেখানে প্রেমের শেষ অন্য কিছুর শুরু—
সেই আলো--
হয়তো বা যার বুকে আর কোন রাত্রি নেই।

এইবার চাঁদভেজা হাতখানি তোল

সূর্য পাটে যাক,
এইবার চোখ তোল – রাত্রি গাঢ় হোক;
তারপর বিলুপ্তির ছায়া আরো ঘন হোক
সঙ্গীতের মতো, প্রাচীন উদ্ভিদের মতো,
আচ্ছন্ন করুক প্রজ্ঞা, আমাদের স্নায়ু, আমাদের সত্তা
বিলম্বিত প্রলয়ে...

প্রিয়তমা,

ধ্বংসের ঠিক আগে
একবার চাঁদখানি দেখ--
আমি ঐ চাঁদ হব,
মেঘের চোখের মতো, বিবর্ণ প্রেমিকের মতো,
তুমি যদি দেখো, আমি হব পথভোলা অস্থায়ী আলো
সন্ধের ডালপালা বেয়ে ক্রমশঃ কঠিন হব, ধাতব...
গাছের উপর, ঐ কুমারি পাতার উপর
রাত্রি হব, ঘনঘোর বাতাসের নীল্ গন্ধ ...
আভা হব, এতটুকু আলোকের আভা,
আমি ভালবাসা হব, বিগত শতকের...

একবার সন্ধে হয়ে ছুঁয়ে যাও,

তোমার শরীর জুড়ে রাতজাগা নদি হয়ে ভাসাব পৃথিবী।
একবার।

3 comments: