সৌকর্য গ্রুপের একমাত্র ওয়েবজিন।

About the Template

সোমবার, ২০ মে, ২০১৩

গুচ্ছ কবিতা - মামনি দত্ত

গুচ্ছ কবিতা
মামনি দত্ত


এসো ফিরে

চলো, এক মুঠো স্বভাব বিরুদ্ধ পৃথিবী ফিরিয়ে আনি
সমস্ত ঋন পরিশোধের পর!

হারান মাঝির ছেলে আর স্কুল কামাই করেনা,
রানু মাসির অনূঢ়া মেয়ে চৈত্রের দহন বেলায়
বর্ষা নামায় নিরন্তর ভালোলাগার আবেশে!

জীর্ণশীর্ণ কোন প্রাণ -চোখের তারায়
মহাকাশ থেকে নামিয়ে আনে
দুয়ার ভাঙা নক্ষত্র আলো,

যেকোন ক্ষত তে আর কোন মাছিদের
হাতযশ খেলবে না অবলীলায়,
ধীরে ধীরে রঙ্গিন কোলাজে জ্যোতিষ্ক সাজিয়ে দেবে
ঈশ্বর কনা দের মহামিছিল!

তোমার আমার সামনেই, আমাদের স্বভূমি
জেগে উঠবে আলোকবর্ষ পাড়ি দিয়ে
আশ্চর্য এক সন্ধ্যায়, সংগীত মূর্ছনায়।।।


ইচ্ছামৃত্যু

এবং সেইসব দু :খের পায়ের কাছে
অপূর্ণ প্রেম নির্দ্বিধায় বসে আছে,
কি হবে বলো কাছে এসে, ভালোবেসে?

ঠোঁটের সীমারেখায় জোৎস্না ভাষা শিখিয়ে
চিনিয়েছিলাম ভেসে যাওয়া জলতান ব্যথা,

আর তুমি গভীরতা পেয়ে
অসুস্থ নিয়নবাতির জলস্রোত দিয়েছিলে
আপেক্ষিক আদ্রর্তা র অসম্ভবতায়,

ধূ ধূ মন আঙুল আভাসে তৃষ্ণার্ত যখন
তোমার ফেলে যাওয়া নুপুরে মুখ রেখেছি,
অন্তত একজীবন হাহাকার ওলোটপালোটের ইচ্ছায়,

আমি না হয় ভাঙাচোরা জীবনে স্বপ্ন মেখেছি,
সেই জীবন -যার পায়ে তীব্র ক্ষুধা রেখেছিলে
কি ভীষণ অসুখ সম্মোহে,

তুমিই বলো কি হবে ভালবেসে?
নীরব অভিমান ফেলে কাছে এসে।।


বিনিময়

এখানে এসে দুহাত পেতেছে নদী,
যে নদীর একাকিত্বে দুই পাড়
তিলতিল হাওয়ায় ধারালো শরীর মিলিয়েছে
সখ্যতায় অথবা নিশিথময়ী ছন্দ কারিগরী তে।

চাওয়া পাওয়ার গিরিপথে নীলাভ আলো
বিস্তার করে চলে মত্যুময় মায়া,

পথ হারানোর মুখে
দক্ষিণের বকুল গন্ধ ঝাঁকে ঝাঁকে
আলো হীন বিলাপ রেখে দিলে
নদী চোখে স্বপ্ন খেলা করে,

আদতে বিনিময় কাল পাথর গায়ে
এঁকেছিল দিগন্তরেখা,
সেইসব রেখাপথে ঘুমন্ত নদীর আলাপন
টুকরো টুকরো কোলাজ সন্ধ্যায়
তার একান্ত নিবিড় প্রার্থনায়।।


অবিশ্বাস্য সংকেত

এবং সেই কথাগুলো থেকে বিশ্বাস ঝরে গেলে
মাটির বুকে অন্তস্রোত হয়ে বয়ে যায়,
আকাশ বুকেও বৃষ্টিদানা অবসর পায়নি-

এক থেকে শত ঝলক অথৈই
ডুবে থাকে পশ্চাত্তাপ,

অদ্ভুত ধূলিকণা হয়ে উড়েছিলো বিশ্বাস যতো
-হয়তো অঝোরে ঝরে যাওয়া ফুলের পাঁপড়ি,
কোন একটায় একবিন্দু শিশির
প্রাচীনকাল রেখে ছিলো,

সেই সব কাল যা কিছু কথা
পাথর চোখে ভাসিয়েছিলো ফোঁটা ফোঁটা তাপ,
বস্তুত: দারুন দহন- নদীতল স্বীকার করেছে
তার ধর্মের জখম তীব্রতায়।।


একাকী

নক্ষত্র নক্ষত্র থেকে হরিণের হৃদয় ছুটে বেড়ালে
ঝুপ আঁধারে নেমে আসে বায়বীয় মগ্নতা,

একাকী যাপন কাল জীবন কড়চায়
খুচরো বিলাসি হিসেবে কোন দ্বন্দ্ব রাখেনি,

যতো মন্দ উপাখ্যান উপসংহার শেষের আগেই
সগর্বে আঙুলের ভাঁজে রাখে পিয়াসী মন,
যা মগ্নতা থেকে দৈবাৎ চুরি গেছে
অপার ঐশ্বরিক ক্ষমতায়।

1 comments:

  1. একাধারে বিস্মিত ও বিমুগ্ধ হলাম! মামনির কাব্য ভাষার স্বচ্ছন্দ নিরিবিলি চলন তার নিজস্ব গতিতে কবিতার এক অনুপম আবহ তৈরী করেছে! শব্দের পরতে পরতে অনুভবের নিটোল বুনন কাব্য শরীরকে অপরূপ মাধুর্য্য দিয়েছে! কাব্য ভাবনার গভীরতার অন্তরে পাঠকের মনকে টান দিয়েছে মামনি অনায়াস দক্ষতায়!

    উত্তরমুছুন