সৌকর্য গ্রুপের একমাত্র ওয়েবজিন।

About the Template

শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৩

ভ্রমণকাহিনী - অরিন্দম চক্রবর্তী





তিনদিন তিনকন্যের সঙ্গে

অরিন্দম চক্রবর্তী



পর্ব- ৪

জাগে রাত ভোর হবে ব'লে



গাড়ি ঢুকল সন্তর রিসর্টে। কেন রিসর্ট বলিনি? কেন অন্যরকম লেগেছিল বলি...

গাড়ির আওয়াজ পেয়ে অভিজিৎ বাবু বাইরে এলেন, সস্ত্রীক। লখা আর বউ ছুটে এল...অভিজিৎ বাবু এগিয়ে এসে স্পন্দনকে কোলে তুলে নিলেন(মানিকতলা থেকে ঘুরে এলেও, দরজা খুলেই বাবা এরকম করত স্পন্দনকে নিয়ে)...'বেটা কেমন লাগছে? বলে গাল টিপে দিলেন। আজ বাঘের গল্প হবে...হালুম!'

তারপর আমাদের দিকে তাকিয়ে...বাথরুমে গরম জল রেখে দিয়েছি হাত-মুখ ধুয়ে চলে আসুন। আমরাও চা খাইনি আপনাদের জন্য ওয়েট করছি।


অভিজিৎ বাবু প্রফেশনাল ... না আবেগ প্রবণ?

আসলে প্রফেশনাল কথাটা শুনলেই মনে হয় টাকা ছাড়া আর কিছু বোঝেনা...বোধহয় কোথাও ভুল হয় ভাবনার। একজন প্রফেশনাল মানুষ সবটুকু করে খুব নিখুঁত ভাবে এবং সে অতি অবশ্যি একজন আবেগপ্রবণ মানুষও বটে।


ঘরে ঢুকি। এই প্রথম ভাল করে ঘরটা দেখি... ভাবি, এত্তবড় বেডরুম হয়! আর সিলিং-এর উচ্চতা আকাশ ছোঁয়া। খাটের সামনে পিছনে নানা জীবজন্তুর মুখ। ডান দিকে ফায়ারপ্লেস। ফায়ারপ্লেসের পাশ দিয়ে একটা ছোট সিঁড়ি উঠে গেছে মাঝামাঝি জায়গায়। ঘরের মধ্যে ঝুল বারান্দা। ওখানে অক্সিজেন একটু বেশি...

কেন বললাম এই ক্থা? আসলে সেখানে আছে পড়ার টেবিল আর তার সামনের র‌্যাকে রাশি রাশি বই।

চার দেওয়ালের ফাঁক ফোকরে পেইন্টিংস। যা সবই একেঁছেন ডাঃ বৈদ্যনাথ গাঙ্গুলি। অজস্র ছোট বড় নানারকম কোয়েনার 'নুড়ি মূর্তি' ঘরের কোণে কোণে। টেবিলের ওপর কাচের ফুলদানিতে রাখা চন্দ্রমল্লিকা। সাদা ও হলুদ।



আমার স্বপ্নের বাড়িতে,আমিই অতিথি...



এভারেস্ট জয় করে এসে(ভাবটা সেইরকমই) শাশ্বতী বিছানায় এলিয়ে পড়ল প্রথমে। একে এক আমি, স্পন্দন ও পরে শাশ্বতী হাত-পা মুখ ধুয়ে নিলাম। পোশাক বদল করে নিলাম। শীতকালে বারবার পোশাক বদলানোর হ্যাপা আছে তাই এমন পোশাক পড়লাম সকলেই, যা পরে রাত্রে বিছানায় শুয়ে পড়া যাবে অনায়াসে।

বাইরে এসে দেখি সেই খড়ের ছাউনি দেওয়া জায়গাটায় সকলে জড়ো হয়েছে।

চা আর গরম গরম ফুলুরি সঙ্গে ফুলকপি বেসন দিয়ে ভাজা।

জমে গেল। ওদিকে স্পন্দনের জন্য দুধ এসেছে, সে মুখ ভেটকে বসে আছে(ভেবেছিল চিকেন মটন আসবে)।
অভিজিৎ বাবু বললেন- বেটা দুধ না খেলে'ত হবেনা। তুমি কী করে বন্দুক চলাবে, বাঘ মারবে !

কাজ দিল।

টুকটাক গল্প করতে করতে হুড়মুড় করে অন্ধকার নেমে এল। অভিজিৎ বাবু বল্লেন, 'চলুন,এইবার ঘরে গিয়ে বসা যাক...'

আর হাল্কা করে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন,'লখা আপনার কথা সারাদিন জিজ্ঞেস করছিল, ও রান্নাঘরের দিকে আছে, যান একবার দেখা করে আসুন...'



শালা ছেলে তো ছেলে, বাপকেও জিতে নিল লোকটা...



লখা আমার হাতে বিশ্বকাপ তুলে দিল। এক লিটার মহুয়ার বোতল। সঙ্গে কয়েকটা মহুয়া ফুলও দিল।

গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে খাওয়া।

রাজা-বাদশার নেশা...



গল্পের সলতেতে আগুন লাগালাম। অভিজিৎ বাবুকে বললাম- আচ্ছা 'বাঘ কোচায়' গেছেন আপনি?

চিক্‌চিক্‌ করে উঠল অরণ্যপাগলের চোখ দুটো।

- আপনি পড়েছেন বাবার লেখা?

- হ্যাঁ পড়েছি তো...

শুরু হল গল্প। জানলাম, সারন্ডা অরণ্যে ফুলের বাহার নেই আছে সবুজের রকমারি। কোনটা হলুদ ঘেঁষা, কোনটা লাল ঘেঁষা আবার কোনটা কালচে ঘন। গুয়া পাহাড়ে চাকরিসূত্রে ছিলেন ডাঃ বৈদ্যনাথ গাঙ্গুলি। মাঝেমাঝে বাংলোতে এসে পড়ত চিতা। কখনও কখনও আসত ডোরাকাটা নেকড়ে।



সকলে মিলে- বাপরে! বলেন কী!!!

বুড়ো বিস্ময়ে বলল- হায়না আসত!!



মহুয়ার প্রথম কিস্তি দিলাম...

'হায়্না তো চায়নায়'

হাসির রোল উঠল ঘরে। থিতিয়ে গেল। আবার গল্প গড়াল...



-আমাদের বাংলো থেকে বাঘকোচা ছিল দেড়মাইল পথ। গোটা পথটাই খাদানের মধ্যে দিয়ে গেছে। দু'পাশে খাদান, মাঝখানে ট্রাম লাইন। এক জায়গায় এসে সকলেই শেষ। খাদান, ট্রাম লাইন, অরণ্য।



থাবা দিলাম...

বললাম ,আচ্ছা জায়গাটার নাম বাঘমারি না হয়ে বাঘকোচা হল কেন?



- কোচা মানে অন্ধগলি। আর এই পথ দিয়ে বাঘ যাতায়াত করে(সব জন্তুদের নাকি এইরকম নির্দ্দিষ্ট পথ থাকে)তাই বাঘকোচা।

তারপর সেই গল্প...মাকড়ায় বসার আগের মুহূর্তে দেখা বাঘের সঙ্গে। চোখাচোখি , দুজনেই দু'জনকে মাপল। তারপর আকাশ কাঁপানো চিৎকার। আসলে বাঘটি এমন জায়গায় চলে গিয়েছিল ওখান থেকে ঝাঁপ দেওয়ার জন্য জায়গাটা উপযুক্ত ছিলনা। পায়ের নীচে মাটি ছিল নরম। আর বাবাও ভয় পেয়েছিলেন। তবু গুলি ছুটল...



ফল তো জানা...



এতক্ষণ অভিজিৎ বাবুর স্ত্রীকে দেখছি কিন্তু মুখে কোন কথা শুনিনি। শুধু জেনেছি ও একজন শিক্ষিকা। এইবার শুনলাম...



-কত রাত হল খেয়াল আছে? ওরা ঘুরে এসেছেন; একটু জিরোতে দাও। কাল তো আবার বেরোবেন...

প্রায় জোর করেই অভিজিৎ বাবুকে নিয়ে চলে গেলেন।



প্রথামত..এরপর ঘরের লোকেরা বলে উঠল(মেয়েরা)- বাবা ! কী জায়গা না।!! কত জানেন ভদ্রলোক!

স্পন্দন বলল, ' বাবা আজ যদি চিতা আসে এখানে'



কোন ফাঁকে বোতল খালি হয়ে গেছে...মহুয়ার গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে বলল্লাম- ভয় পাস না! চিতা ভি পিতা হ্যায়...



বাইরে জ্যোৎস্নার সুনামি আর ঠান্ডার বাঁদরামি বাড়ছে...তবু বাইরে এলাম। চিরকালই কিছুক্ষণের জন্য একা থাকতে মন চায়।

প্রিয়কে আরও নিবিড় ভাবে পাব বলে...



-মা এই এতক্ষণে টাওয়ার এল...শুনতে পাচ্ছ! শুনতে পাচ্ছ...আমরা ঠিক আছি। তোমরা?



-দাদু ঠিক আছে তো? তোর গলাটা ধরাধরা কেন...ঠান্ডা লাগিয়েছিস?



বুঝলাম ঠিক আছে।



মঞ্জুদি গান ধরল- আজ যেমন করে গাইছে আকাশ...



আমি একটা লিরিক্যাল সিনেমার নাম ঠিক করে ফেল্লাম- A Time to Love and Time to Die



নায়িকা হিসেবে কাকে বাছলাম জানেন...রিনা ব্রাউন। আত্ম-অবগাহনের ভঙ্গিতে চাঁদের দিকে তাকিয়ে চাঁদের কাস্তেতে আস্তে আস্তে ধার দিচ্ছে।

অহঙ্কারী নারী...

(শালা! ট্রাজেডি আর কাকে বলে! এক রবীন্দ্রনাথের কবিতা, দুই সুচিত্রা সেন কাউকে কোনদিন জ্ঞানত আমি ভালো বলিনি, তবুও আজ তারাই এল সামনে...)



পর্ব-৫ 

স্কার্ফ ওড়ে....বিকেল গ'লে মোম




দু'একবার ঘুম ভাঙে রাতে। গা ছমছম করে। রুপোলি আলোয় দেওয়ালের ছবি আর জীবজন্তুর মুখগুলো জীবন্ত । শার্সিতে চোখ রাখি। জ্যোৎস্না আঠায় দৃষ্টি আটকে যায়। এমন জ্যোৎস্না কলকাতায় দেখিনি কোনদিন।



নিয়্ম করে সকাল আসে। সন্তুরের সামনের বাগানে পায়চারি করি। পাখির ডাক, পায়ের নীচে শিশিরের হিম আর ফুলদের 'সুপ্রভাত' বার্তা নতজানু হয়ে গ্রহণ করি।

হঠাৎ দেখি সন্তুরের গেট দিয়ে বিদ্যুৎদা ঢুকছে।

- কীরে কোথা থেকে এলি?

- এই একটু ঘুরে এলাম। কয়েকটা গান রেকর্ড করে নিয়ে এলাম।

হেসে, হাতের ছোট্ট রেকর্ডারটা দেখাল। বিদ্যুৎদা কোথায় ঘুরতে গেলে সঙ্গে করে ঐ ছোট্ট রেকর্ডারটা নিয়ে যায়। ওতে গান তোলে। ওর মতে পৃথিবীতে চতুর্দিকেই গান। পাতা ঝরার শব্দে, ভোরের পাখির চিকন গলায়, হাওয়ার ফিসফিসানিতে। আর কলকাতায় ফিরে মাঝেমাঝে রাতে এইসব গান শোনে।

অ-সময় নিয়ে খেলা...



সেদিন সকলেই তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠে। সকাল আটটার মধ্যে আমরা প্রাতরাশ শেষ করে গাড়ির কাছে। আজকে আমাদের অনেকগুলো জায়গা ঘোরার আছে...

জিপ ছুটল মনোহরপুর-কিরিবুরু রোড ধরে। প্রায় ৩০ কিমি গাড়ি ছোটার পর দেখলাম দুটি পথ দু'টি দিকে গেছে বেঁকে। আগের দিন বাঁ দিকের রাস্তা দিয়ে ফিরেছিলাম। আজ ডান দিকের রাস্তা ধরলাম। তুলনামূলক ভাল রাস্তা গতকালের চেয়ে। গাড়ি ছুটছে। রাস্তার বাঁদিকে অরণ্যের সবুজ ঢেউ আর ডানদিকে হলুদ। সুরগুঞ্জা(ছোট্ট সূর্যমুখী) ফুলের ক্ষেত। ওপরে শীতকালের ঘন নীল আকাশ...সব মিলিয়ে মিশিয়ে এক অসাধারণ ল্যান্ডস্কেপ(যাকে শব্দে আঁকার ক্ষমতা আমার নেই)।

আমাদের দেখে দু একটি বাচ্চা ছেলে ছুটে এল সঙ্গে খেতের চাষীভাই। ওর হাতে 'মারফি রেডিও ট্রানজিস্টার'।

শ্রুতির স্মৃতি নড়ে ওঠে।

গাড়ি ছুটছে। বাঁকগুলো ছোট হয়ে আসছে; সুতরাং বুঝতে সমস্যা হয় না আমরা খাড়াই পাহাড়ের দিয়ে উঠছি।

চাষী ভাইয়ের হাতে মারফি ট্রানজিস্টার দেখে আমাদের টুকটাক স্মৃতিকথকতা...

বিদ্যুৎদা রসিকতা বলে- 'ছোট্ট বন্ধুরা, তোমরা সকলে ভাল আছ?'

আমরা সকলে মিলে বলি - হ্যাঁ আ আ আ...

স্পন্দন গলা মেলায় কিন্তু ওর চোখ দেখে বুঝি ও হৃদয় মেলাতে পারছে না।

গাড়ি ছুটছে,একটু এগিয়ে একটা কালভার্টের ওপর গাড়ি দাঁড়াল। তলা দিয়ে কোয়েনার জল বইছে। ছেলেরা নদীর(নালা বলা ভাল) জল সামান্য বাড়াল। টুকটাক ছবি উঠল।

বুড়ো বলল- অরিন্দমদা, এ কিন্তু নালা, নদী নয়।

আমি বললাম- ফ্রান্সে এইরকম ছোট ছোট নালাকেই নদী আখ্যা দেয়, আর দুই পার কী সুন্দর সাজানো!

ল্যুজ বল।

- ওমা তাই! বিয়ের আগে অনেক বছর তুমি ফ্রান্সে ছিলে না গো!

- অরিন্দম, ওই সময়ে মার্গারেটের সঙ্গে তোর একটা সম্পর্ক হয়েছিল, তাই না!



হাসির রোল উঠল গাড়িতে। ল্যুজ বল পেলে সকলেই মাথার ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকাবে...হাঁকিয়েছিল।



গাড়ি ছুটছে... ধীরে ধীরে ডানদিকের ক্ষেত-খামার অদৃশ্য হয়ে গেল। দু'পাশেই তখন অরণ্যের প্রাচীর।

বেশ কিছুটা পথ পার হয়ে বাঁ দিকে নজরে এল মাইলস্টোন। আর তাতে লেখা কিরিবুরু ৬০ কি.মি , চাইবাসা, বড়জামদা ৬০ কি.মি।

বড়জামদা ও চাইবাসার রাস্তা বাঁ দিকে ফেলে আমরা ডান দিকে ঘুরে গেলাম।



চাইবাসা যাওয়া হল না তবু বাঁ দিকে তাকিয়ে একবার ডেকে নিলাম...

'অবনী বাড়ি আছো?'



গাড়ি ছুটছে। শাল-মহুয়ার ভিড় বাড়ছে। পাতা ঝরার সময় তখন, তবুও পরজীবী লতাপাতার ঘন বুনট পর্দায় রাস্তায় আলোর জাফরি। গাড়ির স্পীড হাল্কা করে লক্ষ্মণ...বাঁদিকে একটা ভাঙাচোরা সিমেন্টের বসার জায়গা দেখাল। লক্ষ্মণ বলল,

- জানেন, এইখানে হয়েছিল এক বীভৎস খুন।

- খুন তো বীভৎসই হয়, লক্ষ্মণ।

- না! এমন খুন আগে হয়নি এ তল্লাটে।

- কী রকম?

- মঙরা আর সোনারী এইখানে প্রেম করছিল। সোনারীর বর আছে দুটো বাচ্চাও ছিল, তবু শালীর প্রেমের লেশা কাটেক লাই...সোনারীর বাপ এতেয়া এইখানে ওদের দুজনকে টাঙি দিয়ে মাথাটাকে শরীর থেকে ছুটায় দেয়...

মঞ্জুদি আর শাশ্বতী, ' ইস্‌ ! কী হৃদয়হীন' বলে চোখ বন্ধ করে দিল। বিদ্যৎদা আর বুড়ো চুপচাপ।

আমি ঘটনাটা আগেই জানতাম তাই সেই জায়গায় দঁড়িয়ে ঘটনাটা ভিস্যুয়ালাইজ করতে চেষ্টা করি। আপনাদের একটু বলি...

ওদের খুন করে এতেয়া এই রাস্তা ধরে দুটো কাটা মাথাকে কাঁধে ঝুলিয়ে নিয়ে গিয়ে থানায় আত্মসমর্পন করে। ইচ্ছে করলেই পারত ওখানে ফেলে রেখে যেতে, বাঘ-নেকড়ে খেয়ে নিত। প্রমাণ লোপাট। কিন্তু এতেয়া তা করেনি। ঝুলিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। আর যখন ঝুলিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল তখন নিশ্চয়ই টুপটুপ করে তাজা রক্তের ফোঁটা পড়েছে রাস্তায়...



নাহ্‌ ! এখন রাস্তায় রক্তের দাগ নেই। পরিষ্কার।তবুও বাতাসে কত প্রশ্ন..

হৃদয় বস্তুটি কী? হৃদয় কাদের থাকে?

হৃদয়ের জন্যই কী জীবনভর এত অশান্তি...?

গলায় কাফ সিরাপ ঢাললে এক নিমেষে উত্তর পাওয়া যায়। পেলাম...

হৃদয় শালা এক বর্ণময় শয়তান।



শহুরে বাবু-বিবিদের নিয়ে গাড়ি ছোটে... ৮০ কি.মি পথ উজিয়ে হাজির হই কিরিবুরু চেকপোস্টে।







0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন