সৌকর্য গ্রুপের একমাত্র ওয়েবজিন।

About the Template

শনিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০১৩

ছোটগল্প - শঙ্খ ভৌমিক






রবিন হুড ও রায়া


ছেলেটা প্রায় রোজই আসতো এই শহরতলির পার্কেবয়স বড়জোড় সাত-আট বছর হবে বৈশিষ্ঠহীন চেহারা আলাদা করে চোখে পড়ার কথা নয় হঠা দেখলে  মনে হবে, ছেলেটা একা- অভিভাবকহীনউদ্দেশ্যহীনভাবে পার্কের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়াতো নিজের মনে কথা বলতো, কখনও একটা ফিকে হাসি লেগে থাকতো ওর ঠোঁটেকখনো ঘাসের ওপর বসে খুব মন দিয়ে ঘাসফুলদের সঙ্গে গল্প করতো অথবা  ঘাসফরিঙদের খেলা দেখে খুব মন দিয়ে কিছু ভাবতোকতবার শুয়োপোকা, পিঁপড়ে, মাকড়সা ওর গা বেয়ে চরম আনন্দে ঘুরে বেড়িয়েছে; আর ছেলেটাও নিশ্চিন্তে ওদের খেলার সাথী হয়েছে আবার কোন কোন একলা বিকেল ভরে উঠতো কুয়াশা ভরা ঝিলে নুড়ি পাথরের ঝুপ ঝুপ খেলায় 

পার্কে  দোলনা, ঢেঁকি, স্লিপ, হ্যাঙ্গিংবার, বেসবল ডায়েমন্ড বা আর পাঁচটা বিনোদনের সরঞ্জামের অভাব ছিল না রঙ্গিন বাচ্চারা দঙ্গল বেঁধে আসতো; তাদের হাসি, ঠাট্টা,  খুনসুটিতে ভরে উঠতো পার্কওরা খেলতো এক সময় চলেও যেত ছেলেটা কোনদিনও কারোর সঙ্গে খেলার চেষ্টা করে নি কেউ ওকে খেলার দলে যেচে নেয়ওনি প্রতিনিয়ত এই পারস্পরিক অবজ্ঞা দেখে মনে হবে একে ওপরের অস্তিত্ব সম্বন্ধে হয়ত ওয়াকিবহল নয় কদাচি ছেলেটা স্লিপ বা দোলনা চড়ার জন্য ইতস্তত পায়ে গিয়ে দাঁড়াতো ভিড় থাকলে বেশিরভাগ দিনই ওর সুযোগ আসতো না আস্তে আস্তে চলে যেত রাগ, অভিমান বা দুঃখের কোন প্রতিফলন ওর মুখে পাওয়া যেত না কোনদিনও পরিচিত কেউ হাত নেড়ে কথা বললে ছেলেটা এক-দুটো অন্যমনস্ক উত্তর দিয়ে আবার নিজের খেলায় ফিরে যেত ওর ভাবলেশহীন অভিব্যক্তি দেখে মনে হত যেন ওর একটা অন্য জগ আছে


রায়া 'ইনকিউবেটরের' জানলায় বসে পার্কের দিকে সতৃষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতো  ওর পার্কে যাওয়া বারণ ছিল কারণ ওর এক কঠিন অসুখ হয়েছিলকি অসুখ কেউ জানত না, কিন্তু ডাক্তাররা পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছিল যে আজকের পৃথিবীর বায়ু যতটা দূষিত, তা পরিশোধন করার ক্ষমতা রায়ার ফুসফুসের নেই এই দূষণ শুধু বিষাক্ত রাসায়নিক প্রক্রিয়ার জন্য নয়; শহরকেন্দ্রিক অসম মানব বিকাশের ফলে পালটে যাওয়া বিকৃত পৃথিবীতে গাছেরা রক্তক্ষরণ করছে বড্ড বেশী- সেই হাহাকার বাতাসে মিশে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত এই বাতাসে নিশ্বাস নিলে রায়ার কষ্ট হতপরিশুদ্ধ বায়ুর খোঁজে রায়ার পরিবার শহর ছেড়ে শহরতলিতে এসেছিলতাও রায়া সুস্থ হয়নি ডাক্তাররা বলেছিল আরো দূরে যেতে- সভ্যতা থেকে অনেক দূরে যেখানে প্রকৃতি উন্মুক্ত- গাছপালারা খুশি বাতাসে বিষ নেই   কিন্তু বাবা-মায়ের চাকরি আর ব্যক্তিগয় 'লাইফস্টাইল' আছে- তাই রায়া শহরতলির বাড়ির 'ইনকিউবেটর'-এ বন্দী হয়ে পৃথিবী দেখে 

যেহেতু বাড়ি থেকে প্রায় বেরোতেই পারতো না, রায়া ওর ইনকিউবেটরের জানলা দিয়ে এক অসীম পৃথিবী সৃষ্টি করেছিল সেই পৃথিবীর বনে-জঙ্গলে নতুন উদ্ভিদের  জন্ম হচ্ছে যা সালোকসংশ্লেসের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত ফুসফুস প্রতিষেধক হাওয়া ছাড়ছে রায়া আরো দেখতো যে মানুষ একদিন গান করবে আবার সেই গানের অনুরণনে বাতাস নেচে উঠবে; সেই বাতাসে নিশ্বাস নিলে সবাই সুস্থ হয়ে যাবে এই বাতাস  সকালের পার্কে সবাইকে ছুঁয়ে যাবে- বদলে যাবে সূর্যের আলো; সেই আলো মানুষের ভেতর অবধি পৌঁছে যাবে- আর মানুষ উদ্দেশ্যহীন গতিপথ ছেড়ে ফিরে আসবে ঋজু কক্ষপথে
ছেলেটার নাম মনে মনে 'রবিন হুড' দিয়েছিল রায়াকারণ, একটু ঠান্ডা পড়লেই একটা কালচে-লাল 'হুডি' পড়ে ছেলেটা আসতো পার্কে রায়া ওর বাড়ির জানলা দিয়ে রবিন হুডকে প্রায়ই পার্কে খেলতে দেখতো ওর একাকী জীবন এক গোপন অপরাধবোধ ও উত্তেজনা নিয়ে অনুসরণ করতো রায়া রবিন হুডের এই অদৃশ্য  পৃথিবী আস্বাদন করার জন্য রায়া উন্মুখ হয়ে জানলায় এসে বসতো ওর দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছিল এক গোপন পৃথিবীর চাবিকাঠি আছে ছেলেটার কাছে এক দৃষ্টে যখন রায়া তাকিয়ে থাকতো ছেলেটার দিকে, ওর কেন যেন মনে হত যে ছেলেটা কয়েক মহূর্তের জন্য অদৃশ্য হয়ে যেত- রায়া তখন প্রাণপণে খুঁজতো ছেলেটাকে ওর মন এক গভীর উদ্বেগে ভরে উঠতো মনে হত এক ছুটে চারপাশের বাঁধন ভেঙ্গে ছুটে যায় পার্কে  অথবা স্পাইডারম্যানের মতন জানলা বেয়ে নেমে যাবে পাগলের মতন যখন এইসব ভাবতো রায়া, অবলীলায় আবার রবিন হুড আবির্ভূত হত যেন কিছুই হয়নি রায়া একটা গোপন দীর্ঘশ্বাস ফেলতো- আবার রবিন হুডকে মনে মনে শাসন করতো

শরতের পাতা ঝরতে শুরু করেছে সূর্যের রঙ বদলাতে থাকে এইরকম এক ঝিঙাফুল সাঁঝে রায়া বাড়ি ছেড়ে একদিন পার্কে আসার অনুমতি পেল অনেকদিন বাদে বাইরের স্বাদ মনের সুখে মিটিয়ে নিতে নিতে রায়া এসে বসল পার্কে ওর পরিচিত বেঞ্চিতে ওর সামনে উন্মুক্ত মাঠে একা শুয়ে রবিন হুড মন দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে হাতে কোন জংলি ফুল কখনো ফুলের পাঁপড়ি দিয়ে চোখ ঢেকে আকাশ দেখা- কখনো হাতের আঙুলগুলো পাকিয়ে দূরবিন করে আকাশ দেখা- কত রকম ভাবে  আকাশ দেখা রায়া রবিন হুডকে খানিক্ষণ দেখলো ওর এই খেলায় ভারি মজা পাচ্ছিল  পরন্ত বেলা তখন রঙিন গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে তির্যক আলো ফেলেছে রায়ার মনে হল রবিন হুডের পাশে শুলে আকাশটা আরো পরিস্কার দেখা যাবেতাই ঝপ করে ওর পাশে গিয়ে শুয়ে পড়ে মন দিয়ে আকাশ দেখতে লাগলো কিছুক্ষণ পড়ে যখন পক্ষীরাজ ঘোড়া, সুপারম্যান বা জাস্টিন বিবার কেউই আকাশ থেকে নামলো না রায়া বিরক্ত হয়ে একটা ড্যান্ডিলায়ন তুলে চিবোতে লাগলো তারপর রবিন হুডের দিকে তাকাল জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ওমনি রবিন হুড ঘাসের ওপর গড়িয়ে গড়িয়ে চলে গেল দূরে- দূরে- এক ঢালু বেয়ে গড়াতে গড়াতে এক জঙ্গুলে খাদের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেল রায়ার এক ভয়-মিশ্রিত রাগ হল- খানিকটা অভিমানও  দ্রুত এগিয়ে আসা অন্ধকার ও শ্বাসকষ্টের মধ্যে আর সাহস করে রবিন হুডকে খুঁজতে যেতে পারলো না  বেশ উকন্ঠা নিয়ে বাড়ি ফিরলো রাতের নিয়ন পার্কে একলা বেঞ্চে, দোলনায়, কৃষ্ণপক্ষের আলোয় ম্রিয়মান ঝিলে কোথাও খুঁজে পেল না রবিন হুডকে অনেক রাত অবধি ইনকিউবেটরের জানলা দিয়ে নির্জন পার্কের দিকে তাকিয়ে থাকল

এরপর রবিন হুডের সঙ্গে রায়ার প্রায়ই দেখা হত পার্কে রায়া নিজের পরিচয় দিয়েছিল কিন্তু রবিন হুড কিছু বলে নি নিজের পরিচয় দেয় নি  মাথায় হুডি পড়ে নিজের মনে খেলতো রায়ার অস্তিত্ব প্রায় স্বীকারই করতো না  একদিন রায়া একটা প্রজাপতি ধরার চেষ্টা করলো- কিছুতেই পারছিল না হঠা রবিন হুড কোথা থেকে এসে একটা সুন্দর রঙিন প্রজাপতি দিয়ে গেল রায়াকে রায়াকে থ্যাঙ্ক ইউ বলার সুযোগ না দিয়েই আবার হারিয়ে গেল এইভাবে ওদের মধ্যে এক অদ্ভুত নতুন সখ্যতা গড়ে উঠলো

এক ছুটির সকালে শূন্য পার্কে রায়া একা দোলনা চড়ছিল অনেক উঁচুতে দোল খেয়ে উঠতে পারছিল রায়া এক মুহুর্তের জন্য রায়ার মনে হচ্ছিল ও আকাশে ভাসমান সেখান থেকে বাকি পৃথিবীটা খুব দেখতে ইচ্ছা করছিল রায়ার ওর জানলা দিয়ে দেখা একঘেঁয়ে পৃথিবীর থেকে অনেক আলাদা এই জগ এইসব অন্যমনস্ক ভাবনার মধ্যে হঠা রায়া দেখলো অল্প দূরত্বে রবিন হুড দাড়িঁয়ে আছে আর এক দৃষ্টে ওর দিকে চেয়ে আছে রায়া কি করবে ভেবে না পেয়ে আস্তে আস্তে দোলনা থামিয়ে নেমে এল খানিকটা সঙ্কোচের সঙ্গে রায়া এগিয়ে গেল রবিন হুডের দিকে কাছে আসতেই রায়া দেখলো রবিন হুড  তাকিয়ে আছে ওর দোলনার দিকে; পেছন ঘুরে দেখলো তখনও অল্প অল্প দুলছে ওই দোলনা- যেন অশরীরি কেউ বসে আছে ওখানে আর রবিন হুড ওকে দেখতে পাচ্ছে এক ঝলক ভয় রায়ার শিড়দারা বেয়ে নেমে গেল তবুও সাহস সঞ্চয় করে ও রবিন হুডকে জিজ্ঞাসা করল, " তুমি দোলনা চড়তে চাও?" প্রশ্নটা শুনে এই প্রথম রবিন হুড রায়ার দিকে তাকালো তারপর অস্ফুটে বলল , "উড়বি"? রায়া প্রথমে বুঝতে পারে নি কথাটা জিজ্ঞাসু চোখে তাকাতে ছেলেটা ডানার মতন দু-হাত নেড়ে বলল," উড়তে চাস্‌ তো আয়" বলে উত্তরের অপেক্ষা না করেই বিস্মিত রায়ার হাত ধরে টানতে টানতে জঙ্গলের দিকে নিয়ে গেল

রায়ার বুকের ভেতরে ধুকপুকুনি কিছুতেই বন্ধ হতে চায় না জীবনে প্রথম কেউ ওকে নিয়ে এইরকম গল্পের বই-এর রোমহর্ষক এডভেঞ্চরে ঢুকে যাচ্ছিলরায়ার কল্প জগতে এইরকম অনুভুতি কখনও হয় নি রবিন হুড একাগ্র মনে রায়াকে নিয়ে জঙ্গলে ঢুকে পড়ল বেশ অনেকটা বন্ধুর পাতাঝরা পথ পেরিয়ে এক খোলা জায়গায় এসে দাঁড়ালো ওরা হঠা ঘন জঙ্গলে এইরকম এক খোলা যায়গা দেখে রায়া আশ্চর্য হয়ে গেল এক সুন্দর মিষ্টি আলোয় ভরে উঠেছে চারিদিক কয়েকটা ইতস্তত ছড়ানো গাছের গুড়ি- এখানে ওখানে জংলি ফুল, উড়ছে প্রজাপতি ও মৌমাছি সবুজ ঘাসের ওপর অনায়াসে খেলে বেড়াচ্ছে কাঠবিড়ালি খোলা মাঠে পৌঁছে এক অপার্থিব শিস দিতেই অনেক পাখি উড়ে এসে বসল রবিন হুডের চারপাশে পাখিদের রঙের বাহার থেকে রামধনুর বিচ্ছুরণ হচ্ছে সেই রামধনু বেয়ে আস্তে আস্তে আকাশে উঠতে থাকলো রবিন হুড রায়া আশ্চর্য হয়ে দেখল যে ডানা মেলে উড়ে যাচ্ছে রবিন হুড আর ওকে ঘিরে রামধনু পাখিরা উড়ছে উড়তে উড়তে ওরা মিলিয়ে গেল মেঘের কোলে মূর্তির মতন স্থানু হয়ে রায়া দেখলো ওদের মিলিয়ে যেতে; ওর সঙ্গে বনের কাঠবিড়ালি, বনমুরগি, হরিণ- সবাই চুপ করে এই অভিনব দৃশ্য দেখলো

থমকে গিয়েছিল রায়া কতক্ষণ ওইভাবে ছিল মনে নেই; হঠা মুখ তুলে দেখলো  রবিন হুড ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে রায়ার বিস্ফারিত চোখ দেখেই হয়ত রবিন হুড ওর ছোট্ট হাত বাড়িয়ে দিল রায়া ইতস্তত করছে দেখে, ওর পাশে চুপ করে বসল রবিন হুড রায়ার চোখ দিয়ে তখন অকারণে জল পড়ছে ওর ফুঁপিয়ে ওঠা পিঠে আস্তে আস্তে হাত বুলিয়ে দিল রবিন হুড  বাড়ন্ত বেলায় ওর ছোট্ট আঙুলের স্পর্শ পার্ক ছেড়ে আকাশ, আকাশের গায়ে শরতের কাশফুল, কাশফুল ভেদ করে  সৌরমণ্ডল, সৌরমণ্ডল ছাড়িয়ে ছায়াপথের আরো লুকিয়ে থাকা পৃথিবীর সব ইনকিউবেটরে বন্দি রায়াদের ছুঁয়ে দিল

সেই ছোঁয়া লেগে রায়া উঠে দাঁড়ালো অপলকে পৃথিবীর সবচেয়ে হাল্কা মানুষ মনে হচ্ছিল নিজেকে রায়া রবিন হুডের হাত ধরে অনায়াসে আকাশলীনা হল আস্তে আস্তে ঝাউ, মেপল, ওক ছাড়িয়ে, পার্কের পরিচিত বাঁধা ডিঙিয়ে উড়তে লাগলো দূরে বাড়ির পরিচিত ছাদ, রাস্তা, ট্রাফিক আলো, তারপর... এক অনন্ত শ্বাসরুদ্ধ করা নিঃসংগতাওর হাত ধরে নেই কেউ রবিন হুড নেই রায়ার চিকার কেউ শুনতে পায় না রায়া আস্তে আস্তে ফিরে আসে প্রথমে পার্কে, তারপর বাড়িতে একদম একা রাত্রি গভীর করা একাকিত্ব
রবিন হুডকে রায়া আর দেখতে পায় নি বিহ্বল রায়া অনেক খুঁজেছে ওকে পার্কে, রাস্তায় হুডি পড়া ছেলের কথা জানতে চেয়েছে কেউই মনে করতে পারে নি ওইরকম বর্ণনার কোন ছেলেকে যারা অনেকদিন ওই পাড়ার বাসিন্দা তারাও ওই ছেলের খোঁজ দিতে পারলো না রায়া ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়ল অগত্যা ওর মা-বাবা ওকে নিয়ে শহরতলি ছেড়ে আরো দূরে গ্রামের দিকে চলে যাওয়া স্থির করল যাওয়ার দিন রায়া গাড়িতে উঠে বসার ঠিক পরে ওর সেই গাড়ির জানলায় বসল এক ডাহুক পাখি সেই পাখিটা ওদের সঙ্গে চলল নতুন গন্তব্যস্থলে কখনো আকাশে, কখনো গাছের ডালে, আবার কখনো আবডালে, রায়া তার রবিন হুডকে আবার খুঁজে পেয়েছে

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন