পাঁচটি কবিতা
চৈতালী গোস্বামী
কাফেরের কৈফিয়ৎ
কাফের চাইছ ডাকতে আমায়?
মনের ভিতর ভিন্ন সমাজ গড়ছি বলে?
তোমার বসন্তে সন্ন্যাসিনী সেজে
নিজের সাথেই হোলি খেলব এইবার।
তোমাকে সংস্কার শত বুঁদ করে রাখ
বেঁধে রাখ আষ্টে-পৃষ্টে চিরকাল
আমার বুকে আরো স্পষ্টতর হোক
প্রথম আলোয় অচিন পাখির ডাক।
অস্ত যেতে যেতে সূর্য যে বৈরাগ্য দিয়ে যায়,
আমি সেই রং দেখেছি জানালায়।
আয়নায় সব রঙকে দেখেছি রাজকীয় হয়ে যেতে
তোমার জীবন বৃথা সাদার সাথে খুঁজে মরুক কালো দাগ।
এখনও ভালবাসার কথা বলি
এপাশ ওপাশ করলে চামড়া কাঁটায় চিরে যায়
পেটে বুকে আগুন জ্বলতে থাকে
খাট, চারপাই চিতার মত ঝলসে দেয় রাতে
প্রার্থনার শব্দগুলি জন্ম নিয়েই মিলিয়ে যায় বাতাসে
তবু ভালবাসার কথা বলি
দেখি তারারা অসম্ভব স্নেহ নিয়ে নির্নিমেষ জ্বলছে
নাগালে পাব না তবু এক সুগন্ধি শরীর আমায় টানে।
জানি না গাছের শিকড় বেয়ে কোন বোধ গভীরে প্রবেশ করে।
প্রতিদিন রাত্রি আমায় বয়ে নিয়ে যায়।
ঠিক সেখানে যেখানে সূর্য ওঠার সীমানা....
শিরোনামহীন কবিতা
ওরা আমার রক্তের উচ্চারণ
ফেনিল সমুদ্রের বুকে
মান্দাসে ভেসে যেতে যেতে
বুকে মেখে নিই
সমৃদ্ধ উত্তাপ
ক্ষয়ের বিন্দুগুলি সংগ্রহ করে মালা গাঁথি।
অন্ধকারে ওরা মশালের মত বিচ্ছুরিত হয়।
পাহাড়ের মূক ভাঁজে
ওরা শান্ত নদীর তিরতির
কখনো স্তব গুম্ফায় ঘন্টার
মন্দ্র আন্দোলন
এ এক নির্জন ভালবাসা।
এ নির্জনে নিজেকে ভালবাসা।
জোয়ার-ঝঞ্ঝা-ঘূর্ণিবাতে অবিরত কেন্দ্রের দিকে চলা...
ছন্দ
সবকিছুর একটা নিজস্ব ছন্দ আছে
তীক্ষ্ণ চিৎকারে সেটা ভেঙে যায়
পিয়ানোতে আঙুল রেখ সন্তর্পণে
সুর একবার কাটলে মেলাতে কষ্ট হয়
মেঘগুলো ধীরেসুস্থে ভেসে বেড়ায়
মৃদু মাথা নাড়ে বাগানের ফুল, পাতা
দিনগুলি বড় মনে-পড়বার দিন
সামনে ছড়িয়ে পূর্ণ শূণ্যতা।
মাঝরাতে নদীর বুকে মস্ত চর জাগে
চরের বুকে বালি
আজ রাতে ওই চরে দমকা বাতাস এল
ঢেউয়ের মাথায় যত ছন্দ দুলছিল, থেমে গেল।
পাড় ভেঙ্গে ভেঙ্গে মিশল নদীতে...
কে কার প্রতিদ্বন্দী আজ?
স্মৃতি না স্মৃতি-বিজড়িত রাত
মাঝপথে ছন্দ হারালে খেই হারিয়ে যায়...
দমকা বাতাস পায়ের চিহ্ন মুছে দিয়েছে প্রায়
সামান্য জোৎস্না সম্বল করে জেগে
একা জেতা-হারার অর্থ দেখি না কিছু
মাঝরাতে আমার সাথে নদীও ছিল জেগে
আমার সাথে নদীও দেখেছে তার উদাস চলে যাওয়া...
রূপক
মেঘের বুকে কালো ঘোড়া ছুটিয়েছিল কেউ।
রূপবান মেঘেরা আর আগের মত নেই।
কেমন যেন দলা পাকিয়ে গেছে সব।
পায়ের আঙুলগুলোও কেটে ফেলেছে তারা।
তাইতো এক্কা-দোক্কার ঘুঁটি আর
পরের খোপ-কাটা ঘরে ছোঁড়া হ’ল না...
নিয়ত হীমঘুমে থাকা আত্মা
আর ঝাঁপ দেবে না করিডোর ভেঙে।
তবু ভয় করে।
সমুদ্রের কাছে এসে গুটি-সুটি বসে আছি,
বিড়ালের মত।
নখ থাবার মধ্যে,
যেমন তরবারি রাখা থাকে,
খাপের ভিতর...
জল বড্ড গভীর।
পাড়ে বসেই বুঝতে পারি—
জল টানে।
কতটা টানে
আর টানে কোন কোন পথে...
কাফেরের কৈফিয়ৎ
কাফের চাইছ ডাকতে আমায়?
মনের ভিতর ভিন্ন সমাজ গড়ছি বলে?
তোমার বসন্তে সন্ন্যাসিনী সেজে
নিজের সাথেই হোলি খেলব এইবার।
তোমাকে সংস্কার শত বুঁদ করে রাখ
বেঁধে রাখ আষ্টে-পৃষ্টে চিরকাল
আমার বুকে আরো স্পষ্টতর হোক
প্রথম আলোয় অচিন পাখির ডাক।
অস্ত যেতে যেতে সূর্য যে বৈরাগ্য দিয়ে যায়,
আমি সেই রং দেখেছি জানালায়।
আয়নায় সব রঙকে দেখেছি রাজকীয় হয়ে যেতে
তোমার জীবন বৃথা সাদার সাথে খুঁজে মরুক কালো দাগ।
এখনও ভালবাসার কথা বলি
এপাশ ওপাশ করলে চামড়া কাঁটায় চিরে যায়
পেটে বুকে আগুন জ্বলতে থাকে
খাট, চারপাই চিতার মত ঝলসে দেয় রাতে
প্রার্থনার শব্দগুলি জন্ম নিয়েই মিলিয়ে যায় বাতাসে
তবু ভালবাসার কথা বলি
দেখি তারারা অসম্ভব স্নেহ নিয়ে নির্নিমেষ জ্বলছে
নাগালে পাব না তবু এক সুগন্ধি শরীর আমায় টানে।
জানি না গাছের শিকড় বেয়ে কোন বোধ গভীরে প্রবেশ করে।
প্রতিদিন রাত্রি আমায় বয়ে নিয়ে যায়।
ঠিক সেখানে যেখানে সূর্য ওঠার সীমানা....
শিরোনামহীন কবিতা
ওরা আমার রক্তের উচ্চারণ
ফেনিল সমুদ্রের বুকে
মান্দাসে ভেসে যেতে যেতে
বুকে মেখে নিই
সমৃদ্ধ উত্তাপ
ক্ষয়ের বিন্দুগুলি সংগ্রহ করে মালা গাঁথি।
অন্ধকারে ওরা মশালের মত বিচ্ছুরিত হয়।
পাহাড়ের মূক ভাঁজে
ওরা শান্ত নদীর তিরতির
কখনো স্তব গুম্ফায় ঘন্টার
মন্দ্র আন্দোলন
এ এক নির্জন ভালবাসা।
এ নির্জনে নিজেকে ভালবাসা।
জোয়ার-ঝঞ্ঝা-ঘূর্ণিবাতে অবিরত কেন্দ্রের দিকে চলা...
ছন্দ
সবকিছুর একটা নিজস্ব ছন্দ আছে
তীক্ষ্ণ চিৎকারে সেটা ভেঙে যায়
পিয়ানোতে আঙুল রেখ সন্তর্পণে
সুর একবার কাটলে মেলাতে কষ্ট হয়
মেঘগুলো ধীরেসুস্থে ভেসে বেড়ায়
মৃদু মাথা নাড়ে বাগানের ফুল, পাতা
দিনগুলি বড় মনে-পড়বার দিন
সামনে ছড়িয়ে পূর্ণ শূণ্যতা।
মাঝরাতে নদীর বুকে মস্ত চর জাগে
চরের বুকে বালি
আজ রাতে ওই চরে দমকা বাতাস এল
ঢেউয়ের মাথায় যত ছন্দ দুলছিল, থেমে গেল।
পাড় ভেঙ্গে ভেঙ্গে মিশল নদীতে...
কে কার প্রতিদ্বন্দী আজ?
স্মৃতি না স্মৃতি-বিজড়িত রাত
মাঝপথে ছন্দ হারালে খেই হারিয়ে যায়...
দমকা বাতাস পায়ের চিহ্ন মুছে দিয়েছে প্রায়
সামান্য জোৎস্না সম্বল করে জেগে
একা জেতা-হারার অর্থ দেখি না কিছু
মাঝরাতে আমার সাথে নদীও ছিল জেগে
আমার সাথে নদীও দেখেছে তার উদাস চলে যাওয়া...
রূপক
মেঘের বুকে কালো ঘোড়া ছুটিয়েছিল কেউ।
রূপবান মেঘেরা আর আগের মত নেই।
কেমন যেন দলা পাকিয়ে গেছে সব।
পায়ের আঙুলগুলোও কেটে ফেলেছে তারা।
তাইতো এক্কা-দোক্কার ঘুঁটি আর
পরের খোপ-কাটা ঘরে ছোঁড়া হ’ল না...
নিয়ত হীমঘুমে থাকা আত্মা
আর ঝাঁপ দেবে না করিডোর ভেঙে।
তবু ভয় করে।
সমুদ্রের কাছে এসে গুটি-সুটি বসে আছি,
বিড়ালের মত।
নখ থাবার মধ্যে,
যেমন তরবারি রাখা থাকে,
খাপের ভিতর...
জল বড্ড গভীর।
পাড়ে বসেই বুঝতে পারি—
জল টানে।
কতটা টানে
আর টানে কোন কোন পথে...
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন